বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বৃহস্পতিবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল, যদিও সপ্তাহের শুরুতে যে কারণগুলো পেয়ারটির মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাকে সমর্থন করেছিল, তার তুলনায় এখন তুলনামূলকভাবে কম কারণ বিদ্যমান। চলতি সপ্তাহে ইউরোপীয় মুদ্রার ধারাবাহিক দর বৃদ্ধি দেখা গেছে। তবে, এই দর বৃদ্ধির মূল কারণ কী? জেরোম পাওয়েল দুইবার ফেডারেল রিজার্ভের হকিশ বা কঠোর অবস্থানের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। সাম্প্রতিক মূল্যস্ফীতি প্রতিবেদন পাওয়েলের এই মতামতকে আরও জোরদার করেছে যে শীঘ্রই মূল সুদের হার কমানো উচিত হবে না।
ইউরোজোন থেকে কয়েকটি তুলনামূলকভাবে ইতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, বিশেষ করে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত শিল্প উৎপাদন প্রতিবেদন, যা দীর্ঘদিন পর প্রথমবারের মতো পূর্বাভাসের চেয়ে ইতিবাচক ফলাফল প্রদর্শন করেছে। তবে, প্রশ্ন ওঠে যে শিল্প উৎপাদন প্রতিবেদন কি ফেডারেল রিজার্ভের মুদ্রানীতি থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ? আমরা পূর্বেই উল্লেখ করেছি যে দৈনিক টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী কারেকশন অব্যাহত রয়েছে, তবে ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে প্রবণতাগুলো বারবার পরিবর্তিত হচ্ছে, যা মার্কেটে এলোমেলো এবং কিছুটা অযৌক্তিক মুভমেন্ট সৃষ্টি করছে। একটি নতুন ট্রেন্ডলাইন তৈরি হয়েছে, যা ইউরোরকে সমর্থন প্রদান করছে, তবে এই লাইনটি যে কোনো মুহূর্তে, এমনকি আজও ব্রেক করা হতে পারে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে বৃহস্পতিবার একাধিক ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছে। দিনের শুরুতে মূল্য 1.0433-1.0453 জোন থেকে দুবার বাউন্স করে, এরপর দিনের শেষে এটি এই লেভেলের নিচে নেমে যায়। প্রথম সেল সিগন্যাল এবং অপেক্ষাকৃত কম কার্যকর দ্বিতীয় সেল সিগন্যালটি শর্ট পজিশন ওপেন করার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারত। তবে, উভয় ক্ষেত্রেই এই পেয়ারের মূল্য নিকটবর্তী লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে। এর ফলে, যদিও এই ট্রেডগুলোতে কোনো ক্ষতি হয়নি, তবে মুনাফার সুযোগও সীমিত ছিল।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, র্তমানে মধ্যমেয়াদে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে। স্থানীয় পর্যায়ে আগের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সমাপ্ত হয়েছে এবং নিম্নমুখী মুভমেন্ট আবার শুরু হয়েছে। ইউরোর আরও দরপতনের সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক কারণগুলো এখনো মার্কিন ডলারকে সমর্থন করছে। তবে, দৈনিক টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী কারেকশন আরও কয়েক সপ্তাহ ধরে চলতে পারে।
শুক্রবার, কারেকশন চলমান থাকার কারণে এই পেয়ারের মূল্যের অনিয়মিত মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে। তাই ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত এবং টেকনিক্যাল লেভেলের উপর করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণযোগ্য লেভেলগুলো হলো: 1.0156, 1.0221, 1.0269-1.0277, 1.0334-1.0359, 1.0433-1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, এবং 1.0845-1.0851।
শুক্রবার, ইউরোজোনে চতুর্থ প্রান্তিকের জিডিপির দ্বিতীয় অনুমান সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শিল্প উৎপাদন এবং খুচরা বিক্রয় সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। জিডিপি প্রতিবেদন মার্কেটের পরিস্থিতিকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করবে বলে মনে হচ্ছে না, তবে মার্কিন প্রতিবেদনগুলো মার্কেটে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।