শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবারও GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত ছিল। যদিও ইউরোর মূল্য বৃদ্ধি সামষ্টিক অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে অযৌক্তিক মনে হয়েছে, তবে পাউন্ডের মূল্যের মুভমেন্ট আরও বেশি অযৌক্তিক মনে হয়েছে। বিশেষ করে, শুক্রবার যুক্তরাজ্যের কোনো অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি, এবং বৃহস্পতিবার প্রকাশিত জিডিপি ও শিল্পোৎপাদন প্রতিবেদনের ফলাফল পূর্বাভাসের তুলনায় সামান্য ইতিবাচক ছিল। ব্রিটিশ অর্থনীতির মাত্র ০.১% প্রবৃদ্ধিকে শক্তিশালী সূচক হিসেবে বিবেচনা করা কঠিন। তবুও, মাত্র দুই দিনে পাউন্ডের মূল্য প্রায় ১৫০ পিপস বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং পুরো সপ্তাহে পাউন্ডের মূল্য ২০০ পিপস পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।
মার্কেটের ট্রেডাররা মূলত পাওয়েলের হকিশ বা কঠোর অবস্থান গ্রহণের ইঙ্গিত এবং গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন মূল্যস্ফীতি প্রতিবেদনের ফলাফল উপেক্ষা করেছে। তবে, এটি আমাদের প্রত্যাশিত ফলাফল ছিল, কারণ বর্তমানে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টের মূল চালিকা শক্তি হলো দৈনিক টাইমফ্রেমে চলমান কারেকশন। টানা তিন মাস ধরে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করেছে, এবং এখন এটি কারেকশন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। লোয়ার টাইমফ্রেমে, এই কারেকশন বিভিন্ন পর্যায়ে পরিবর্তিত প্রবণতা হিসেবে দেখা যাচ্ছে, যা মার্কেটকে অস্থির ও জটিল করে তুলছে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
শুক্রবার ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে একাধিক ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, যা ভালো মুনাফার সুযোগ তৈরি করেছিল। ইউরোপীয় ট্রেডিং সেশনের শুরুতে, মূল্য 1.2547 লেভেল থেকে প্রায় নিখুঁতভাবে রিবাউন্ড করে, যার ফলে 1.2613 লেভেলের দিকে ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট দেখা যায়। পরে, মূল্য এই লেভেলের নিচে কনসোলিডেট করে, যা একটি সেল সিগন্যাল করে, এবং এটি দীর্ঘমেয়াদি বাই পজিশনের জন্য একটি আদর্শ এক্সিট পয়েন্ট হয়ে ওঠে। এই ট্রেড থেকে মোট মুনাফার পরিমাণ ৪০ পিপস পর্যন্ত পৌঁছেছে।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, স্বল্পমেয়াদে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হতে পারে, তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোর সম্পূর্ণ মুভমেন্টকে শুধুমাত্র দৈনিক টাইমফ্রেমে কারেকশন হিসেবেই বিবেচনা করা উচিত। মাঝারি মেয়াদে, আমরা পাউন্ডের আরও দরপতনের প্রত্যাশা করছি, বিশেষ করে 1.1800 লেভেলের দিকে, কারণ আমাদের দৃষ্টিতে এটিই সবচেয়ে যৌক্তিক পরিস্থিতি। এখন মূল বিষয় হলো দৈনিক টাইমফ্রেমে চলমান ঊর্ধ্বমুখী কারেকশন শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
সোমবার, নতুন করে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হতে পারে, বিশেষ করে যখন মার্কেটে উচ্চমাত্রার অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। গত সপ্তাহে কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই পাউন্ডের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী ছিল, তবে স্বল্পমেয়াদে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মোমেন্টাম এখনো অক্ষুণ্ন রয়েছে।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে, গুরুত্বপূর্ণ ট্রেডিং লেভেলগুলো হলো: 1.2010, 1.2052, 1.2089-1.2107, 1.2164-1.2170, 1.2241-1.2270, 1.2301, 1.2372-1.2387, 1.2445, 1.2502-1.2508, 1.2547, 1.2633, 1.2680-1.2685, 1.2723, 1.2791-1.2798।
সোমবার, যুক্তরাজ্য বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, তাই মার্কেটে দুর্বল মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেটে থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।