শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার, EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের অত্যন্ত ধীরগতির মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে, যেন এই পেয়ার কারও অনুরোধে এমনভাবে মুভমেন্ট প্রদর্শন করেছে। সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট শক্তিশালী হলেও কিছুটা পরস্পরবিরোধী ছিল। তা সত্ত্বেও, ট্রেডাররা সক্রিয় ছিল। বেশ কয়েকটি ব্যবসায়িক কার্যকলাপ সূচক এবং অপেক্ষাকৃত স্বল্প গুরুত্বসম্পন্ন অন্যান্য প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, ইউরোপে, জার্মানি এবং ইউরোজোনের উৎপাদন খাত প্রত্যাশার চেয়ে ইতিবাচক ফলাফল প্রদর্শন করেছে, তবে সেবাখাতে প্রত্যাশার তুলনায় দুর্বল ফলাফল পরিলক্ষিত হয়েছে।
মার্কেটের ট্রেডাররা এই মিশ্র সংকেতগুলোর প্রতিক্রিয়ায় কীভাবে সাড়া দেবে? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, উৎপাদন সংক্রান্ত PMI ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে, তবে পরিষেবা PMI সূচক 50.0 লেভেলের নিচে নেমে গেছে। দিনের শেষে, ইউরোর মূল্য সামান্য হ্রাস পেয়েছিল, তবে মূল্য ট্রেন্ডলাইনের ওপরে রয়ে গেছে। আমাদের ধারণা, এই ট্রেন্ডলাইনের ব্রেকআউট আসন্ন এবং এটি নতুন করে স্বল্পমেয়াদে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু করতে পারে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের চার্টে, শুক্রবার মাত্র একটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। গত সপ্তাহে স্বল্প মাত্রার ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতার কারণে ট্রেডিং সিগন্যালের সংখ্যা খুবই কম ছিল। ট্রেডিং সেশন শেষ হওয়ার কাছাকাছি সময়ে একমাত্র সিগন্যালটি তৈরি হয়, যখন মূল্য 1.0451 লেভেলে নেমে আসে তবে আবার উপরে উঠতে পারেনি। তবে ট্রেডিং সেশন শেষ হওয়ার সময় ট্রেড ওপেন করা যৌক্তিক সিদ্ধান্ত ছিল না।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, এখনো মধ্যমেয়াদে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা এবং স্থানীয় পর্যায়ে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। আগের মতোই, ইউরোর মূল্য হ্রাসের সম্ভাবনাই বেশি, কারণ মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো মার্কিন ডলারকে বেশি সহায়তা করছে। তবে, দৈনিক টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী কারেকশন কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত চলতে পারে। মূল নিম্নমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার আগে আমরা কয়েকবার পরিবর্তনশীল প্রবণতা দেখতে পেতে পারি।
সোমবার, এই পেয়ারের মূল্যের আবারও খুব দুর্বল মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে। এমনকি মূল্য ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করলেও, এটি ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতার মাত্রাকে খুব বেশি প্রভাবিত নাও করতে পারে এবং আজও খুব বেশি সামষ্টিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে, গুরুত্বপূর্ণ ও পর্যবেক্ষণযোগ্য লেভেলগুলো হল: 1.0156, 1.0221, 1.0269-1.0277, 1.0334-1.0359, 1.0433-1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, এবং 1.0845-1.0851।
সোমবার, সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিশেষ কিছু নেই। ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI) প্রতিবেদন কিছুটা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে, তবে এটি শুধুমাত্র জানুয়ারির দ্বিতীয় অনুমান, যা প্রাথমিক অনুমানের তুলনায় খুব বেশি ভিন্ন হবে না। সবচেয়ে সম্ভাবনাময় পরিস্থিতি হলো, আজ আরেকবার "একঘেয়ে সোমবার" দেখা যেতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।