সোমবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট

সোমবার কোনো স্পষ্ট কারণ ছাড়াই EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত রাখার প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হয়েছিল, তবে এই প্রবণতা দ্রুত থেমে যায়। উইকেন্ডে, জার্মানির সংসদীয় নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছিল, যা সোমবার মার্কেটে ট্রেডিং শুরুর সময় প্রাথমিকভাবে ইউরোর মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সৃষ্টি করেছিল। তবে, নির্বাচনের ফলাফলের প্রতি প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া কেন এত ইতিবাচক ছিল তা ব্যাখ্যা করা বেশ কঠিন। যদিও জার্মানির সরকারের পরিবর্তন হয়েছে, ইউরোপীয় অর্থনীতির জন্য তাৎক্ষণিক বা স্বল্পমেয়াদী কোনো উল্লেখযোগ্য সুবিধার বিষয়টি এখনও অস্পষ্ট। আমরা মনে করি যে মার্কেটের ট্রেডারদের এই প্রতিক্রিয়া মূলত আবেগপ্রবণ ছিল, যা দ্রুতই ম্লান হয়ে যায়, এবং এই পেয়ারের মূল্য পুনরায় অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইনের কাছাকাছি ফিরে আসে। আমরা আশা করছি এই সপ্তাহে ট্রেন্ডলাইনটি ব্রেক করা হবে, যা নতুন করে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্টের সূচনা করবে। বর্তমানে, দৈনিক টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্য একটি ফ্ল্যাট রেঞ্জের ঊর্ধ্ব সীমানার কাছাকাছি অবস্থান করছে, এবং ইউরোর আরও দর বৃদ্ধির জন্য শক্তিশালী মৌলিক কারণের প্রয়োজন হবে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
EUR/USD পেয়ারের 5-মিনিটের চার্টে, সোমবার দুটি নির্ভরযোগ্য ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। রাতের বেলা, মূল্য 1.0526 লেভেল থেকে সুনির্দিষ্টভাবে রিবাউন্ড করেছিল, যা নির্দেশ করে যে ইউরোপীয় সেশনের শুরুতেই শর্ট পজিশন ওপেন করা যেতে পারত। মার্কিন সেশনের সময়, মূল্য 1.0451-এ নেমে আসে, যেখান থেকে আমরা আরেকটি রিবাউন্ড পর্যবেক্ষণ করি, যা দিনের দ্বিতীয়ার্ধে লং পজিশনে এন্ট্রির সুযোগ তৈরি করেছিল। উভয় ট্রেডই লাভজনক হয়েছিল।
মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, এখনও মাঝারি-মেয়াদে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা এবং স্থানীয় পর্যায়ে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে। আগের মতোই, ইউরোর মূল্য হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি, কারণ মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট ইউরোর তুলনায় মার্কিন ডলারকে অনেক বেশি সমর্থন করছে। মূল নিম্নমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার আগে ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে প্রবণতার পরিবর্তন দেখা যেতে পারে, তবে আমরা শীঘ্রই এই পেয়ারের মূল্য হ্রাসের প্রত্যাশা করছি।
মঙ্গলবার, এই পেয়ারের মূল্যের খুব দুর্বল মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে। এমনকি মূল্য ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করলেও তা ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতার মাত্রায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে নাও পারে, কারণ আবারও আজ খুব কম সংখ্যক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে।
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে, পর্যবেক্ষণযোগ্য লেভেলগুলো হল 1.0156, 1.0221, 1.0269-1.0277, 1.0334-1.0359, 1.0433-1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0845-1.0851। মঙ্গলবারের একমাত্র উল্লেখযোগ্য ইভেন্ট হিসেবে জার্মানির চতুর্থ প্রান্তিকের জিডিপি প্রতিবেদন (তৃতীয় অনুমান) প্রকাশিত হবে। আমরা আশা করি না যে এই প্রতিবেদনের প্রভাবে মার্কেটে উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে, কারণ জার্মানির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সম্ভবত -0.2% হ্রাস পাবে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।