শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত রাখার প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হয়েছে। তবে, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো দিনের প্রথমার্ধে ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্যকে প্রভাবিত করার মতো কোনো উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক সংবাদ প্রকাশিত হয়নি। ইউরোর মূল্য বৃদ্ধি কিছুটা যৌক্তিক ছিল, কারণ ইউরোজোনের চতুর্থ প্রান্তিকের জিডিপি প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাশার তুলনায় শক্তিশালী ছিল। তবে, জিডিপি প্রতিবেদন প্রকাশের আগেই ইউরোর মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়েছিল, যা নির্দেশ করে যে এই মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি জিডিপি প্রতিবেদনের ফলাফলের সরাসরি প্রতিক্রিয়া ছিল না। এর বিপরীতে, পাউন্ডের ক্ষেত্রে মৌলিক প্রেক্ষাপট থেকে কোন সমর্থন ছিল না। তাহলে, পাউন্ডের মূল্য কেন আবার বৃদ্ধি পেল? এর উত্তর খুবই সহজ: ডোনাল্ড ট্রাম্প।
যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট কানাডা ও মেক্সিকোর আমদানিকৃত পণ্যের উপর শুল্ক ছাড়ের মেয়াদ আরও এক মাস বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন, তবুও মার্কেটের ট্রেডারদের তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। বিনিয়োগকারীরা মার্কিন ডলারে বিনিয়োগ থেকে দূরে সরে আসছে, কারণ তারা মার্কিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতির কোনো ইঙ্গিত দেখতে পাচ্ছে না। বাস্তবে, এই উন্নতির প্রয়োজন না-ও হতে পারে, বরং ট্রাম্পের গৃহীত এবং আসন্ন নীতিমালা দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে উল্লেখযোগ্যভাবে মন্থর করতে পারে এবং প্রধান বাণিজ্য অংশীদারদের সঙ্গে দেশটির সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে পারে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে শুক্রবার, 1.2913 লেভেলের আশেপাশে বেশ কয়েকটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। তবে, ট্রেডাররা মূলত এই লেভেলটি উপেক্ষা করেছিল। পাউন্ডের মূল্য কেবল ইউরোর মূল্যের মুভমেন্ট অনুসরণ করেছিল এবং টেকনিক্যাল লেভেলগুলোতে কোন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। নতুন ট্রেডাররা 1.2913 লেভেলের কাছাকাছি এক বা দুইটি ট্রেড ওপেন করতে পারতেন, তবে স্টপ লস সক্রিয় হওয়ার কারণে উভয় ট্রেডই সম্ভবত ব্রেকইভেনে ক্লোজ হয়ে যেত।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, স্বল্পমেয়াদে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হতে পারে, তবে ট্রাম্প এটি প্রতিরোধ করার জন্য সম্ভাব্য সকল কিছু করছেন। মধ্যমেয়াদে, আমরা এখনও 1.1800 লেভেলের দিকে পাউন্ডের দরপতনের সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি, কারণ এটিও সবচেয়ে যৌক্তিক ফলাফল বলে মনে হচ্ছে। তবে, এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো দৈনিক টাইমফ্রেমের ঊর্ধ্বমুখী কারেকশন কখন এবং কীভাবে শেষ হবে তা পর্যবেক্ষণ করা। এখন মার্কিন ডলারের মূল্যের ১৬ বছরের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সমাপ্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
সোমবার, যদি ট্রাম্প তার অস্থিতিশীল নীতিগুলো বজায় রাখেন এবং বিশ্ব অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন, তাহলে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। এমনকি জাপানও এখন ট্রাম্পের বিরাগভাজন হয়েছে, এবং তিনি কানাডার সঙ্গে সীমান্ত চুক্তি পরিবর্তনের দাবি তুলেছেন।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে গুরুত্বপূর্ণ ট্রেডিং লেভেল হচ্ছে: 1.2301, 1.2372–1.2387, 1.2445, 1.2502–1.2508, 1.2547, 1.2613, 1.2680–1.2685, 1.2723, 1.2791–1.2798, 1.2848–1.2860, 1.2913, 1.2980–1.2993, 1.3043। সোমবার, যুক্তরাজ্য বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো বড় অর্থনৈতিক ইভেন্ট নির্ধারিত নেই। তবে, এর মানে এই নয় যে সোমবারে মার্কেটে আলোড়ন সৃষ্টি হবে না। ট্রাম্প এমনকি উইকেন্ডেও বিশ্রাম নেন না। শুক্রবার, তিনি কানাডার সঙ্গে ১৯০৮ সালে প্রণীত সীমান্ত চুক্তি পুনর্বিবেচনার প্রস্তাব দিয়েছেন এবং দাবি করেছেন যে মার্কিন-জাপান বাণিজ্য চুক্তিতে জাপানই বেশি সুবিধা পেয়েছে। এটি প্রায় নিশ্চিত যে ট্রাম্প বিভিন্নভাবে বিশ্ব অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করা অব্যাহত রাখবেন, এবং মার্কেটের ট্রেডাররা আরও ডলার বিক্রির মাধ্যমে ট্রাম্পের বক্তব্য ও গৃহীত পদক্ষেপের প্রতি প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শুন পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।